বাংলাদেশের মোল্লাদের মধ্যে ইদানীং নতুন এক ট্রেন্ড শুরু হয়েছে, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বক্তাদের ঘণ্টা দুয়েকের জন্য হেলিকপ্টারে করে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওয়াজ মাহফিলে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। তারা মনে করে এসকল বক্তাদেরকে ভাড়া করে নিয়ে গিয়ে তাদের দিয়ে বক্তৃতা দেওয়ালে হেদায়েত মিলবে। হেদায়েত কিন্তু কারো কোন মুখের কথায় চলে আসে না। হেদায়েত পেতে হোলে একনিষ্ঠতা থাকতে হয় এবং বিশ্বের সকলের জন্য রহমত কামনা করতে হয়।
কিন্তু এসকল বক্তারা কি এসব মাহফিলে গিয়ে আসলে কি করে? সারাক্ষণ শুধু হিন্দুদের গাল দেওয়া, হিন্দু মেয়েদের বেশ্যা বলে অবহিত করা, অমুসলিমরা কত খারাপ তা বর্ণনা করা, ভয়ভীতি দেখানো, নতুন নতুন ফতোয়া দেওয়াই হলো এসকল বক্তাদের মূল কাজ। এসব আজেবাজে কথাবার্তা শুনে মুসলমানরা লজ্জা পায় কিনা তা জানি না; কিন্তু আমরা এসব শুনে ভীষণ লজ্জা পাই।
হিন্দুদের গালাগাল করে কি সওয়াব আশা করে আমার মাথায় আমি আসলে ধরতে পারি না। অন্যদের অনিষ্ট চিন্তা করে, খারাপ কথার বুলি ফুটিয়ে, দুই-চারটা ড্যান্স দিয়ে আসলে কি হয়? এসব কি কোন কাজে আসে? এভাবে সওয়াব মিলে?
আর ধর্ম প্রচারের জন্য কাড়ি কাড়ি টাকা বিনষ্ট করারও আমি কোন কারন দেখি না। ধর্ম কি তাহলে শুধুমাত্র একটি ব্যবসা? যদি তাই হয়, তাহলে বলতেই হয় যে ধর্ম ব্যবসা হলো সবচেয়ে লাভজনক একটি ব্যবসা। তেমন কোন ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন পরে না। বরঞ্চ জনগণের টাকা পয়সা খরচ করে ১৫ হাজার টাকা, ২৫ হাজার টাকা, ৩০ হাজার টাকা, ১ লাখ টাকা, আগাম ফরম পূরণ, এডভান্স টাকা, গাড়ির তেল, ড্রাইভারের হাদিয়া, বিমানের টিকেট ইত্যাদি খাটে অপচয় করা হয়।
এভাবে যারা ভাড়ায় খাটা বক্তারা বিভিন্নভাবে হিসাব নিকাশ করে, চুক্তি করে, দরদাম করে ওয়াজ মাহফিলে হিন্দু তথা অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে কুৎসা রটনা করে, তাদের মতো পাষণ্ড ও হিংসুটে লোকদের বক্তৃতার মাধ্যমে কিভাবে ইসলামের প্রচার হয় ও কিভাবে তারা ইসলামের শিক্ষার প্রচলনকরতে পারে, তদুপরি, ইসলামের কি লাভ হয় এই বিষয়টি আমার মোটেও বোধগম্য নয়।